Sunday, April 9, 2017

অকাল বোধন

-- কবে এল?
-- গতকাল রাত্রে।
-- তোমরা দমদম গিয়েছিলে আনতে?
-- নাহ, তবে রঘুকে পাঠিয়েছিলাম গাড়ি নিয়ে।
-- রঘু কিছু বলেনি?
-- সেরকম কিছু না। ও তো শান্তাকে ছোট থেকে দেখছে।
-- আচ্ছা। ঘুম ভেঙেছে?
-- নাহ, কাল অত রাতে এল। আমি আর ডাকিনি।
-- সেই ভালো। আমি আসি গো। বিকেলে আসব নাহয়।
-- তোমার আবার কিসের তাড়া? রান্নার লোক আছে তো! আমার মত নাকি?
-- আরে তা নয়, জানোই তো ওর বাবা ...
-- ধুর ছাড়ো।
-- তা কতদিন বাদে এল শান্তা? এক বছর না?
-- না না, তার বেশী। গত আগস্টে গিয়েছিল আর এই পুজোয়।
-- ওহ। জানো আমার রনির কিন্তু গুরুদেব এখনও শান্তা। বার বার বলে, কত ছেলে এলো গেলো, শান্তাদার মত কাউকে দেখলাম না। ভাবা যায়, আমাদের এই মফঃস্বল শহর থেকে আই আই টি?
-- না না, এই তো গতবছর কে একটা পেল শুনলাম?
-- আরে এখন তো সিট বাড়িয়ে দিয়েছে। শান্তাদের সময় ছিল নাকি সেরকম!! মিশন বয়েজ স্কুলের ছোট ছোট ছেলেরা এখনও শান্তা দাশগুপ্ত-র নাম শুনলে অজ্ঞান। স্যারেরাও বলেন -- "ওর'ম ছেলে হয়না"।
--  তোমার রনিও তো ভালোই বাবা।
-- কি যে বল। কোথায় শান্তা আর কোথায় রনি। এখন বলছে আর পড়াশুনা করবে না, কিসব নাকি ব্যবসা করবে। ভাবো! তোমার মত ভাগ্য করে তো আর জন্মাইনি। আমার ছেলে উচ্চমাধ্যমিকেই ২ বার --
-- সেই। ভাগ্য। আমার ছেলেও ওরকম উচ্চমাধ্যমিক দু'বার দিলে বোধহয় ভালো হত।
-- কবে হল গো এসব?
-- ও যাওয়ার পর পরই। শুনেছি আগে থেকে ভেবেই গিয়েছিল।
-- তোমরা জানতে?
-- না না। ওর বাবা তো ইন্টারনেট পারেও না, তাই দেখিওনি। এই তো ক'দিন আগে আমাদের রুনুর ছেলে টি সি এস থেকে আমেরিকা গেল চাকরি করতে। ওরা তো দেখি কম্পিউটারে ভিডিও চ্যাট করে।
-- তো তোমরা কবে জানলে?
-- আসার এক মাস আগে বলল।
-- কাল দেখে কিছু বুঝতে পারলে?


-- মা, গুড মর্নিং, বাবা কই? আরে শুভ্রা কাকিমা না? কেমন আছেন? রনি ভালো?

(কালো টি শার্ট আর বারমুডা পরে ঘরে এল শান্তা)

-- আমি আসি দেবকীদি। ভালো আছি বাবা। বিকেলে আবার আসব। তোর কাকুর আসলে ... বিকেলে মন্ডপে আসবি তো?

-- নিশ্চয়। এতদিন বাবার ভালো পাঞ্জাবী পরে পুজোয় যেতাম। এবার থেকে মায়ের শাড়ী পরব।