পুজো মানেই কাশফুল। সেই কবে মানিকবাবু দেখিয়ে গিয়েছিলেন অপু-দূর্গা ট্রেনলাইনের পাশে কাশফুল দেখেছিল, তারপর থেকে বাঙালি কাশফুলের প্রতি এক অপত্য স্নেহ বয়ে চলেছে।
আমি ছোটবেলায় খুব একটা কাশফুল দেখিনি। জানতামও না এরকম একটি ফুল হয়। তারাবাগে কাশফুল হত না। হয়ত পাশের ফার্মটায় হত, কিন্তু সেখানে আমার যাওয়া বারণ ছিল, তাই দেখিনি।
ক্লাস ফোরে পড়তে স্কুল থেকে দেখানো হল "পথের পাঁচালী"। সেখানে প্রথম কাশফুল দেখলাম। মানে সেভাবে লক্ষ্য করিনি সত্যি কথা বলতে। লক্ষ্য করলাম যখন পরের সপ্তাহে ড্রয়িং ম্যাডাম এসে বললেন সবাইকে ঐ দৃশ্যটির ছবি বাড়ি থেকে এঁকে আনতে। হোম-ওয়ার্ক। বাড়ি ফিরে বাবাকে বলতে বাবা পুরোনো আনন্দমেলা খুলে ছবিটি বার করলেন। সেই প্রথম ঠিক ভাবে কাশফুল দেখা।
তার পরের বছর পুজোয় কলকাতা যাই। মামারবাড়ি। ট্রেনে করে যেতে যেতে রেল লাইনের ধারে কাশফুল দেখলাম এবার। মনে হল - বাহ, অপুর মত আমিও তাহলে রেললাইনের ধারেই প্রথম কাশফুল দেখলাম।
বহুবছর পরের কথা। ২০০৭। আমি তখন সবে গেন্সভিলে গিয়েছি। গেন্সভিলে পুজো হবে কিনা ভাবতে ভাবতে শুনি হবে। না, এটি গেন্সভিলের পুজোর গল্প না, সেই গল্প পড়ে বলব। যাই হোক, পুজোর ক'দিন আগে ইস্কনে খেতে গেছি দুপুরে। অতনুদার সঙ্গে দেখা। খেতে খেতে অতনুদা বলল
"আমাদের ডিপার্ট্মেন্টের পাশে কিছু কাশফুল হয়েছে।"
বেশ অবাক হলাম। কাশফুল যে দেশের বাইরে হয়, তাই ধারণা ছিল না। খাওয়ার পর ছুটলাম সয়েল সায়েন্স ডিপার্ট্মেন্টের দিকে। অতনুদা ভুল বলেনি। দেখলাম ডিপার্ট্মেন্টের পাশেই এক দঙ্গল কাশফুল হাওয়ায় দুলছে। খানিকক্ষণ তাকিয়ে থেকে যেন মনে হল সত্যি এবার পুজো শুরু হবে। ঢাকিরা যেন ঢাক তুলছে বাদ্যি শুরু করার জন্য। পাড়ায় বাঁশ পড়ছে প্যান্ডেল তৈরীর জন্য। আসলে জানেন তো, মানুষ বাড়ির বাইরে বেরোলে
বাড়িকে সবচেয়ে মিস করে। সবাই করে। প্রথম এক বছর এটা ভীষণ কষ্ট দেয়। তারপর আস্তে আস্তে মানিয়ে নেওয়ার সময়টা আসে। অনেকেই মানিয়ে নেয়, ভাবে "বাড়ি হলে ভালো হত, কিন্তু এটাই বা কম কি?"
কেউ কেউ পারে না, তারা হয়ত বাড়ি ফিরে যায়। সবচেয়ে কষ্ট হচ্ছে যারা মানিয়ে নিতে পারে না, অথচ পরিস্থিতির চাপে ফিরতেও পারে না।
আমি তখন সবে দু'মাস হল বাড়ি ছেড়েছি, কাজেই মন খারাপটা তুঙ্গে। কাশফুল দেখে ওর'ম আকাশপাতাল ভাবছি। হঠাৎ পাশে এক গলা
"Excuse me, can you tell me the way to Marston Science Library?"
ঢাকিরা বাদ্যি নামিয়ে রাখল, মুহূর্তটা নষ্ট হয়ে গেল।
২০১২ তে আমি গেন্সভিল ছাড়ি। ২০১১-র পুজোটা আমার গেন্সভিলে শেষ পুজো। ভেবেছিলাম খেয়াল রাখব সয়েল সায়েন্স ডিপার্ট্মেন্টের কাছে কাশফুল হয়েছে কিনা। নাহ, তালেগোলে ভুলেই গিয়েছিলাম। আর আমার কাশফুল দেখা হয়নি।
জানি না আর কোনদিন গেন্সভিল যেতে পারব কিনা, গেলেও সেখানে কাশফুল দেখব কিনা। হয়ত কাশফুল থাকবে, আমার পর নতুন কোন সদ্য বাড়ি ছাড়া বাঙালি ছাত্রের আবার সেই কাশফুল দেখে বাড়ির কথা মনে পড়বে।
আমি ছোটবেলায় খুব একটা কাশফুল দেখিনি। জানতামও না এরকম একটি ফুল হয়। তারাবাগে কাশফুল হত না। হয়ত পাশের ফার্মটায় হত, কিন্তু সেখানে আমার যাওয়া বারণ ছিল, তাই দেখিনি।
ক্লাস ফোরে পড়তে স্কুল থেকে দেখানো হল "পথের পাঁচালী"। সেখানে প্রথম কাশফুল দেখলাম। মানে সেভাবে লক্ষ্য করিনি সত্যি কথা বলতে। লক্ষ্য করলাম যখন পরের সপ্তাহে ড্রয়িং ম্যাডাম এসে বললেন সবাইকে ঐ দৃশ্যটির ছবি বাড়ি থেকে এঁকে আনতে। হোম-ওয়ার্ক। বাড়ি ফিরে বাবাকে বলতে বাবা পুরোনো আনন্দমেলা খুলে ছবিটি বার করলেন। সেই প্রথম ঠিক ভাবে কাশফুল দেখা।
তার পরের বছর পুজোয় কলকাতা যাই। মামারবাড়ি। ট্রেনে করে যেতে যেতে রেল লাইনের ধারে কাশফুল দেখলাম এবার। মনে হল - বাহ, অপুর মত আমিও তাহলে রেললাইনের ধারেই প্রথম কাশফুল দেখলাম।
বহুবছর পরের কথা। ২০০৭। আমি তখন সবে গেন্সভিলে গিয়েছি। গেন্সভিলে পুজো হবে কিনা ভাবতে ভাবতে শুনি হবে। না, এটি গেন্সভিলের পুজোর গল্প না, সেই গল্প পড়ে বলব। যাই হোক, পুজোর ক'দিন আগে ইস্কনে খেতে গেছি দুপুরে। অতনুদার সঙ্গে দেখা। খেতে খেতে অতনুদা বলল
"আমাদের ডিপার্ট্মেন্টের পাশে কিছু কাশফুল হয়েছে।"
বেশ অবাক হলাম। কাশফুল যে দেশের বাইরে হয়, তাই ধারণা ছিল না। খাওয়ার পর ছুটলাম সয়েল সায়েন্স ডিপার্ট্মেন্টের দিকে। অতনুদা ভুল বলেনি। দেখলাম ডিপার্ট্মেন্টের পাশেই এক দঙ্গল কাশফুল হাওয়ায় দুলছে। খানিকক্ষণ তাকিয়ে থেকে যেন মনে হল সত্যি এবার পুজো শুরু হবে। ঢাকিরা যেন ঢাক তুলছে বাদ্যি শুরু করার জন্য। পাড়ায় বাঁশ পড়ছে প্যান্ডেল তৈরীর জন্য। আসলে জানেন তো, মানুষ বাড়ির বাইরে বেরোলে
বাড়িকে সবচেয়ে মিস করে। সবাই করে। প্রথম এক বছর এটা ভীষণ কষ্ট দেয়। তারপর আস্তে আস্তে মানিয়ে নেওয়ার সময়টা আসে। অনেকেই মানিয়ে নেয়, ভাবে "বাড়ি হলে ভালো হত, কিন্তু এটাই বা কম কি?"
কেউ কেউ পারে না, তারা হয়ত বাড়ি ফিরে যায়। সবচেয়ে কষ্ট হচ্ছে যারা মানিয়ে নিতে পারে না, অথচ পরিস্থিতির চাপে ফিরতেও পারে না।
আমি তখন সবে দু'মাস হল বাড়ি ছেড়েছি, কাজেই মন খারাপটা তুঙ্গে। কাশফুল দেখে ওর'ম আকাশপাতাল ভাবছি। হঠাৎ পাশে এক গলা
"Excuse me, can you tell me the way to Marston Science Library?"
ঢাকিরা বাদ্যি নামিয়ে রাখল, মুহূর্তটা নষ্ট হয়ে গেল।
২০১২ তে আমি গেন্সভিল ছাড়ি। ২০১১-র পুজোটা আমার গেন্সভিলে শেষ পুজো। ভেবেছিলাম খেয়াল রাখব সয়েল সায়েন্স ডিপার্ট্মেন্টের কাছে কাশফুল হয়েছে কিনা। নাহ, তালেগোলে ভুলেই গিয়েছিলাম। আর আমার কাশফুল দেখা হয়নি।
জানি না আর কোনদিন গেন্সভিল যেতে পারব কিনা, গেলেও সেখানে কাশফুল দেখব কিনা। হয়ত কাশফুল থাকবে, আমার পর নতুন কোন সদ্য বাড়ি ছাড়া বাঙালি ছাত্রের আবার সেই কাশফুল দেখে বাড়ির কথা মনে পড়বে।