Wednesday, October 28, 2015

পুনর্মিলন

"স্যার, চিনতে পারছেন?"
"না, ঠিক চিনতে পারলাম না, কে বলো তো?"
"আমি স্যার, অনির্বাণ, ২০০৩ মাধ্যমিক, ২০০৫ উচ্চমাধ্যমিক, টাউন স্কুল । "
"ও মনে পরেছে, খোসবাগানে বাড়ি না তোমাদের?"
"হ্যা স্যার, এই অবস্থায় আর আপনাকে প্রণাম করতে পারছি না। "
"আরে না না, ঠিক আছে, তা পায়ের এই দশা কি করে?"
"বাইক এক্সিডেন্ট স্যার, পা টাও গেছে।"
"ওহ, কোথায় হয়েছিল?"
"ওই গোলাপবাগ মোড়ের কাছে, পিছন থেকে লরির ধাক্কা। "
"সাবধানে চালাবে তো? হেলমেট ছিল না?"
"ছিল স্যার, তবুও  ..."
"হুম, কি দিনকাল পড়ল? তা তুমি চাকরি কি করতে? তোমার সঙ্গে তো মাধ্যমিকের পর আর দেখাই হয়নি বোধহয়। "
"দেখা হয়েছে স্যার, আমি তো স্কুলেই ছিলাম। তবে সায়েন্স নিইনি। তাই আপনার অঙ্কের ক্লাসে দেখেননি।"
"ওহ তাই হবে, ভুলে যাই।  তুমি কি কমার্স ছিলে ?"
"না স্যার, আর্টস। "
"তারপর কি করলে?"
"রাজ কলেজ থেকে বি. এ. পাস করে বসেই ছিলাম স্যার। টিউশন করছিলাম, ব্যান্ক, রেলের পরীক্ষা দিচ্ছিলাম, কিছুই পাচ্ছিলাম না।  অবশেষে বছর ৩ এক আগে এই ডমিনোজ পিত্জা তে চাকরি পেলাম।"
"বর্ধমানে ডমিনোজ আছে নাকি?"
"অনেক দিন তো স্যার, ৩ বছর হলো।  আপনি খাননি?"
"নাহ, আমি সেই আমেরিকায় গিয়ে ছেলের কাছে থাকার সময় খেয়েছিলাম। কলকাতা তে আছে জানি, বর্ধমানে আছে জানতাম না। তো সেখানে কি করতে? "
"এই স্যার, আমি বাড়ি বাড়ি পিত্জা ডেলিভারি করতাম। বাইক চালাতে পারি, ইংরেজি, হিন্দি দুটোই বলতে পারি, চাকরি পেতে কোনো অসুবিধা হয়নি।"
"সেই করতে গিয়েই কি এই এক্সিডেন্ট?"
"হ্যা স্যার।"
"তা তোমার ভাই বোন  আছে?"
"ভাই আছে স্যার, অর্ণব।  বম্বে তে চাকরি করে, ওই যে দেখুন এসেছে।"
"আচ্ছা, তোমার বাবা কি অবসর নিয়েছেন?"
"হ্যা স্যার, হেড পোস্ট অফিসে চাকরি করতেন।"
 "তা তুমি সংসার করেছ?"
"না স্যার, এই চাকরি তে ..."
"হুম"
"আপনার কি হলো স্যার?"
"ক্যান্সার, যকৃতে।"
"এ বাবা, খুব কষ্ট শুনেছি ?"
"হ্যা তা কষ্টটা ভয়ানক-ই বটে। "
"আপনার ছেলে, মানে অতীনদা তো আমেরিকায় থাকে, ওখানে শুনেছি খুব ভালো চিকিত্সা, দেখাননি?"
"আরে ৩ মাস আগেই ধরা পড়ল, অতীন বলছিল আসবে আমাকে নিয়ে যেতে, ছুটিই পায়না বেচারা। এখন আবার কিসব গ্রিন কার্ড না কি করাচ্ছে, কে জানে কবে আসবে এদেশে।"
"ওহ, ওটা কে ওখানে দাঁড়িয়ে ? আমি তো ভাবলাম অতীনদা। "
"না না, ও আমার ভাগ্নে সুবিমল, পাশের বাড়িতে থাকে।"
"আচ্ছা আচ্ছা।"
"তোর কথা একেবারেই মনে পরছে না, তুই কি স্কুলে খুব দুষ্টু ছিলি ? তুই বলছি কেমন? "
"অবশ্যই তুই বলুন। হ্যা স্যার, সেই একবার আপনার ক্লাস কামাই করে আমরা স্টারে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম, আপনি জানতে পেরে আমাদের বেত দিয়ে মারেন।"
"ওহ মনে পরেছে, তুই সেই দলে ছিলি, তার মানে তুই বসন্তর বন্ধু?"
"ছিলাম স্যার, এখন বসন্ত এলাকার এম.এল.এ. আমাকে কি আর বন্ধু ভাবে?"
"জানি রে, গতবছর এসেছিল আমাকে বাড়ি ভোটের আগে।  সঙ্গী সাথীদের সামনে আমাকে এমন ভাবে স্যার স্যার করতে লাগলো, যেন খুব শ্রদ্ধা করে।  জীবনে তো ক্লাসে দেখলাম না। "
"জানেন স্যার, আপনার একটা ডাকনাম ছিল আমাদের মধ্যে?"
"শুনেছি মনে হয়, তবু বল। "
 "তুফান মেল।  আপনি খুব তাড়াতাড়ি অঙ্ক কসতেন , আমরা কিছুই বুঝতাম না।  ফ্যাল ফ্যাল করে বোর্ডের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। তাই এই নাম।  কিছু মনে করলেন না তো স্যার?"
"আরে ধুর, এখন আর মনে করে কি হবে? তা তুই সায়েন্স পড়লি না কেন?"
"স্যার, আমি মাধ্যমিকে কোনরকমে অঙ্কে ৫০ পাই।  ওই ত্রিকোনমিতি আমার মাথাতে কোনদিন ঢুকত না। "
"আরে বলবি তো, তোকে নাহয় আমি ক্লাসের পর আলাদা করে দেখিয়ে দিতাম। "
"হ্যা স্যার, সেটা ভুল হয়েছে।"
"আসি রে, আমার ডাক পরেছে, ওপারে গিয়ে তোর জন্য অপেক্ষা করছি। "
"আপনার তাড়া থাকলে চলে যেতে পারেন।"
"আরে ধুর, কিসের তাড়া ? তুই আয়ে।  দেখা হচ্ছে?"
"ঠিক আছে স্যার। "


পুরুতমশাই বললেন, "সুবিমল, মামাকে শেষ বারের মত প্রণাম করে নাও।"









Saturday, September 19, 2015

তারাবাগ ডাইরিজ ২ ঃ আমার পুজো

শরৎকাল এলেই আমার ছোটবেলার পুজোর দিনগুলির কথা মনে পরে যায়। বর্ধমানে বড় হয়েছি, থাকতাম University Teachers' quarters তারাবাগে। আমার পুজোতে ঠাকুর দেখা বা জামাকাপড় কিনতে যাওয়া তেমন ছিল না। অনেকটাই ঘরকুনো, বা ঠিক ভাবে বলতে গেলে পাড়াকুনো পুজো হত। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই দেখতাম মা বেড়িয়ে গেছেন অঞ্জলি দিতে বা পুজোর জোগাড় করতে। অর্থাৎ লুচি নয়, জলখাবার হচ্ছে পাউরুটি আর ডিম সিদ্ধ, খুব একটা আপত্তি থাকত না। কারণ তারপর শুরু হত টানা ৩-৪ ঘণ্টার ক্রিকেট। খুব ছোটবেলা থেকেই নাস্তিক বলে কোনদিন পুজোয় অঞ্জলি দেয়ার কথা মাথায় আনিনি। দুপুরবেলা এসে পূজাবার্ষিকী আনন্দমেলা বা শুকতারা নিয়ে বসা। কাকাবাবু, বাবলু বা ফ্রান্সিস -এর সঙ্গে দুপুরটা কেটে যেত। বিকেল হলে দূরদর্শনের পরদায় পূজা পরিক্রমা দেখা। কলকাতা বা অন্যান্য জেলার বিভিন্ন মণ্ডপের পুজো টিভিতেই দেখতাম। সন্ধ্যে হলেই আমাদের পাড়ার প্যান্ডেলে চলে যেতাম। প্রসাদ খাওয়ার পর শুরু হত সাংস্কতিক অনুষ্ঠান। কোনদিন পাড়ার ছেলেরা মিলে নাটক করল, বা মেয়েরা নাচ/গান এর আয়োজন করল। কোনদিন বাইরে থেকে কোন magician এলেন। আবার কোনদিন পরদা ফেলে দেখান হত "Born Free" (এটা নিয়ে আমার ঘোর আপত্তি থাকত, কারণ প্রতিবারি ওই একিই সিনেমা দেখান হত)।
     কোন কোন বার পুজোর সময় বাড়ির বাইরে ঘুরতে যাওয়া হত। একবার মনে আছে শঙ্করপুর গিয়েছিলাম। বাবা কিন্তু চাইতেন দশমীর দিন তারাবাগে থাকতে। দশমীর দিন ভ্যানে করে ঠাকুর নিয়ে সারা পাড়া ঘোরান হত। তারপর বিসর্জন ও লাড্ডু বিতরণ। বাবা ফিরে ঠাকুরমা আর ঠাকুরদার ছবিতে মালা দিতেন। দুজনের কাউকেই আমি কোনদিন দেখিনি। ঠাকুমা চলে গেছেন যখন বাবার ২ বছর বয়স, আর ঠাকুরদা যখন বাবার বয়স ১০। একবার দেখেছিলাম দশমীর পর বাবা একা ঘরে চুপ করে ঠাকুমার ছবির দিকে তাকিয়ে আছেন । জানি না, ঠিক এই কারণেই কি বাঙ্গালি বার বার শারদোৎসব করে?

Wednesday, September 16, 2015

তারাবাগ ডাইরিজ: রেলযাত্রা

আমার ছোটবেলায় ট্রেনযাত্রার এক আলাদা ভূমিকা ছিল।  এই ট্রেনযাত্রা কিন্তু দূরপাল্লার ট্রেন মানে দিল্লি বা বম্বে নয়।  নিছকই বর্ধমান থেকে কলকাতা ট্রেনযাত্রা। ছুটি ছাটা পরলেই মা বাবার সঙ্গে রওযানা দিতাম মামাবাড়ি। প্রথমে রিকশা করে বর্ধমান স্টেশন, সেখান থেকে ট্রেন-এ হাওড়া।  তারপর এল ৭ এ  বাস করে বেহালা সরশুনা, যেখানে আমার মামাবাড়ি। এই ছিল বাঁধা গত।  ট্রেন চার রকমের হত -- কর্ড লাইন লোকাল, মেন লাইন লোকাল, কর্ড লাইন এক্সপ্রেস ও মেন লাইন এক্সপ্রেস।  মেন লাইনের ট্রেনগুলো ঘুরে যেত।  তাই আমরা মূলত কর্ড লাইনের ট্রেনেই যাতায়াত করতাম। যদিও বড় স্টেশনগুলো যেমন হুগলী, ব্যান্ডেল, সবই মেন লাইনে।
    প্রথম ধাপ ছিল আমাদের তারাবাগ রিক্সা স্ট্যান্ড থেকে রিক্সা নিয়ে স্টেশন যাওয়া। প্রতিবারই দেখতাম বাবার সঙ্গে রিক্সাওয়ালার দর দাম চলত। আমার মনে পরে ৫ টাকা রিক্সা ভাড়াতেও আমরা স্টেশন এসেছি। এখন সে ভাড়া বেড়ে হয়েছে ৪০।  স্টেসনে আবার টিকিট কাটার লাইন। মা প্রতিবারই টিকিট কাটতেন, কারণ "লেডিস" লাইন সবসময় ছোট হত।  তারপর ওভারব্রিজ পেরোনো। ট্রেন প্লাটফর্ম -এ দিয়ে দিলে আমরা নেমে পড়তাম।  না দিলে ওপর থেকে ট্রেন দেখা আর প্রতীক্ষা।  সত্যাজিত রায়ের "রতনবাবু ও সেই লোকটা" পড়ার পর থেকে আমার ওভারব্রিজে দাঁড়াতে ভয় করত।
    ট্রেনে উঠে আমার বায়না শুরু হয়ে যেত হকারদের থেকে জিনিস কিনে দেওয়ার।  লোকাল ট্রেন হলে আমার পোয়া বারো, কারণ প্রত্যেক স্টেশনেই নতুন নতুন হকার উঠত কামরায়। সল্টেড বাদাম, ঝালমুড়ি, চিরেভাজা, শশা, লেবু লজেন্স, দিলখুশ, শনপাপড়ি আরো কত কি।  মনে আছে কর্ড লাইনের কোনো এক স্টেশন থেকে এক বৃদ্ধ উঠতেন সিঙ্গারা নিয়ে। উঠেই বলতেন, "আজে বাজে তেলে নয়, পোস্টম্যান তেলে ভাজা।" বায়না করলেই যে সব কিছু পেতাম এমন না, বেশিরভাগ-ই পেতাম না।  তবু যা পেতাম সেই যেন সম্পদ। রাত্রের দিকে হাওড়া থেকে বর্ধমান গামী ট্রেন এ আসত ডিম সিদ্ধ ও আলুর চপ। আর একটা জিনিসের প্রতি আমার খুব লোভ ছিল, সেটা হলো "পেপসি" বা ইংলিশে popsicle। এটা বাবা কোনদিন কিনে দেয়নি, সোজা অজুহাত "ওসব ড্রেন এর জল দিয়ে তৈরী, খেলেই কলেরা।" দুপুরের দিকের ট্রেন এ এক  চানাচুর বিক্রেতা উঠত।  তার বুলি ছিল "চুপ চাপ বসে না থেকে টুক টাক হাত চালান।" একজন লজেন্স বিক্রেতা তো তার লজেন্সের নাম দিয়েছিলেন "ক্ষীরের মৌচাক।"
    খাবার ছাড়াও ট্রেন এ বিক্রি হত নানান রকমারি দ্রব্য যেমন চিরুনি, আয়না, ঝাঁপি।  এক বিক্রেতা তো বলেই বসতেন "দাদারা, এই চিরুনিটার বাজারে দাম ২০ টাকা, আমার কোম্পানি  আপনাকে দিচ্ছে মাত্র ১০ টাকায় , শুধু তাই না দাদারা, এর সঙ্গে পাচ্ছেন আরো একটি সুদৃশ্য চিরুনি একদম বিনামূল্যে, শুধু তাই না   ....." -- দেখা যেত সে ১০ টাকায় মোট ৫ টি চিরুনি দিচ্ছে।  এ ছাড়াও উঠত বই বিক্রেতারা। আমি বই পড়তে ভালবাসতাম বলে বাবা ট্রেন এ উঠলে একটা বই কিনে দিতই।  আমি কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট ছিলাম না, খালি মনে হত সব হকার দের থেকে সব কিছু কিনতে পারছি না কেন?
    আবার বর্ধমানে ট্রেন থেকে নামলেই রিক্সাওয়ালা রা ছুটে আসত ওভারব্রিজে। "কোথায় যাবেন বাবু?" আমরা জানতাম এরা বেশি ভাড়া চাইবে, তাই এদের পাত্তা না দিয়ে স্টেশন থেকে বেরিয়ে রিকশা করতাম।
    আজকাল সরকারী বাস হয়ে যাবার পর থেকে বর্ধমান কলকাতা ট্রেন যাত্রা একেবারেই কমে গেছে; তারপর থাকিও না আর বর্ধমানে।  গত বছর কেন জানি না ট্রেন যাত্রার দরকার পরেছিল, লোকাল ট্রেন এই কলকাতা গেছিলাম। ট্রেন এ উঠলাম, সেই আগের মতই সব স্টেশনে থামতে থামতে চলল।  হকার ও উঠলো। আমি স্রেফ দু কাপ চা ছাড়া কিছুই কিনলাম না।  বুঝতে পারলাম ট্রেনটা একই আছে, হকাররাও একিই আছেন, শুধু আমি বড় হয়ে গেছি।
     মনে পরে যায় ছোটবেলায় কোনো এক শীতের সন্ধ্যেবেলা আমি হয়ত পড়ছি।  মা রাত্রের খাবার গরম করছেন। বাবা রাত ৯ টার খবর শুনছেন।  পুরো পাড়াটাই যেন ঘুমের পরিকল্পনায় ব্যস্ত।  শুধু শোনা যায় ঝিঝি পোকার ডাক, সেই সময় আমার কানে ভেসে আসে ট্রেন যাওয়ার শব্দ। বুঝি না সেটা লোকাল, না এক্সপ্রেস, নাকি মালগাড়ি ....

Saturday, August 22, 2015

My Best Friend

“When is your train tomorrow?”
“Eight o’clock in the morning. Pass me the ball.”
“It’s no fun playing football with you.”
“Yeah, I know. You suck.”
“No, there used to be ten of us playing together. That was fun. What’s a game of football with just two players!!”
“I know, I hope school reopens soon and we get to play again.”
“Am not too hopeful; from what I heard from my dad, school is not going to reopen very soon.”
“Hmm, my dad was saying something like that too. Since Paris fell, he has been very gloomy.”
“Let’s stop this game and chat.”
“Yeah, it is boring anyway.”
“We sit under the tree?”
“Yeah.”
“You are lucky Oskar. You are travelling tomorrow. You know, the last time I travelled was five years ago, when my parents took me to Warsaw.”
“Am not sure how lucky I am. My parents didn’t look very happy this morning when I mentioned about the trip.”
“Why? They don’t like to travel in trains?”
“No, something else they won’t tell me. Come to think of it, the Germans ordered to keep our doors open before we leave our house. Who travels like that? Last year, when we went to visit my uncle at Krakow, we had our doors locked.”
“Oh, I think there’s some mystery there. Let’s find it out. First thing, you don’t board the train tomorrow. Stay back with me. We will investigate in the night; let’s find out what the Germans have planned.”
“Ha ha, you baby Sherlock Holmes. I can’t risk that. You didn’t see the posters around the city yesterday, did you? It said clearly, any Jew who doesn’t board the train ‘will be subject to death penalty’”.  
“Oh. I see.”
“It’s late. Gotta go. Will you come to see me off at the station?”
“I don’t know. My mom won’t allow me perhaps.”
“Then here take these.”
“What? Ten toy soldiers, two boxes of marbles and these adventure books?”
“Yes, the Germans asked to carry the essentials only. Although marbles are essential, I will take enough in my pockets. Don’t lose them. I’ll get them back from you once am back. And one thing. you have a habit of folding pages. Don’t do that with my books.”
“I will not.”
“You better not. If I see my books have folded pages, you’ll get a black eye.”


***************************

“Finally, you managed to meet me at the station?”
“Yes, my mom is busy in the kitchen. I sneaked out.”
“Great. Take care of my marbles and remember what I said about the book.”
“I will. Why are you wearing a thick jacket. It’s pretty warm.”
“Dumbo, we will face winter in three months. It’s better to be prepared for the future.”
“What!! You’ll be away from home for three months!! I want to travel with you. Can you tell the German officer am your brother?”
“Forget it. A blond boy like you can never be passed as a Jew. You don’t even have a blue star armband. And besides, do you think this train ride will be very delightful? Just look at the train.”
“Hmm, I can see your point. The train looks rather dull, with just one door and no windows. What’s the space on the top for?”
“That’s for ventilation, I mean, letting the air in.”
“There are no seats or benches in the train?”
“No. Only the floor for all of us to sit on.”
“Why are they taking you in such a bad train?”
“I guess this is the beginning of an adventure; you know adventurers not always get the best transports. Remember ‘Around the world in eighty days’.’’
“I do.”
“Well, my mom’s calling me. Bye!! Take care!! Don’t fold the pages.”
“I won’t. Will you write to me once you reach your destination?”
“I will send you postcards. Bye!”


No, Oskar has never sent me a postcard. I have never heard of him again, none has. The books are still with me, pages unfolded.

Monday, April 13, 2015

Final Goodbye

“So, when are you leaving?”
“Tomorrow night.”
“Emirates?”
“Nah, Qatar”
“Oh ok.”
“Won’t your parents come today?”
“They will; I told them to come half an hour late. Knew you’d be here.”
“Yeah.. I understand.”
“Your family knows you are here?”
“Take a guess.”
“Sigh…..they still hate me? Knowing my condition? Did you tell them?”
“Yes I did.”
“And…..what? they still hate me?”
“I think not. Dad didn’t respond. Ma said she’s sorry for you.”
“Hmm. Anyway, when will you reach San Francisco?”
“10 am PST. It’ll be night here. I’ll call you next morning, ok?”
“Tell me the truth -- why are you leaving?”
“I told you; had I stayed here for some more time dad would have married me to Smita.”
“You used to like her, remember? You told me when we first met.”
“Not like her like that...stop it”.
“Don’t blush. Anyway, your parents don’t know you are leaving tomorrow?”
“Of course not. I’ll tell them once am in California.”
“Hmm, but how did you pack your bags and all without them knowing?”
“Oh my bags are with Roshni. I’ll take them from her house on my way to the airport.”
“Nice. Good job Roshni. But, wait, what will your parents think if you leave your house at the middle of the night?”
“I won’t. Planning to leave around dusk. Will tell them have an important meeting with Roshni. She will put up an alibi if they call her. They won’t suspect; and knowing your condition, they won’t.”
“Great. Eloping the house, eh?”
“If you say so.”
“Wait, you didn’t answer my question. Why are you leaving?”
“I told you!! Dad would have married me to Smita…”
“Don’t lie.”
“What?”
“Don’t lie.”
“You don’t trust me?”
“I do, but I know you are not honest now. You can’t bear to see us separate in the way that’s inevitable. You think this is better -- being away from me when the moment calls.”
“No, not really.”
“Don’t lie, I love you. I know you. I can understand your each and every action.”


Our conversation was interrupted by a nurse arriving with a tray of food. She looked at me, and then said “Sir, I have to feed Mr Sen.”
“Don’t bother, I’ll help him.”
She left.


I left too. After some time, when his parents arrived. We kissed for the last time as soon as the nurse left; knowing we’d probably not get a time again, in this lifetime at least. I put on the sunglasses to hide my tears as I walked out of the cancer ward of Bellevue nursing home.