-- এতক্ষণে বাড়ি আসার সময় হল?
জানি আমার দরজার কড়া নাড়ার আওয়াজ মা বুঝতে পারে। নইলে বাড়িতে সবিতাদি থাকলেও মা নিজেই দরজা খুলতে আসে। সবিতাদি দেখলাম টি ভির সামনে বসে লাউ কাটছে। টি ভিতে এখন কোলগেটের বিজ্ঞাপণ।
-- এই খেলা শেষ করেই এলাম।
-- বাজে বকিস না, কখন সন্ধ্যা নেমে গেছে!! অন্ধকারে কিভাবে ফুটবল খেলিস? নিশ্চয় আড্ডা দিচ্ছিলি?
-- না মা, আড্ডা না। এই একটু আর কি ...
-- আজ পায়ে লাগেনি তো?
-- না আজ ঠিক আছে
টি ভিতে গান শুরু হল -- "জন্মভূমি"...
-- যা বাথ্রুমে জল রাখা আছে, স্নান করে নে। প্যান্টটা তো কাদা ভর্তি, নামিয়ে দে। কাল সকালে ধুয়ে নিস।
-- না না, আমি এটা পরে কালকেও খেলতে যেতে পারব।
-- যা বলছি শোন। তোর ঐ কালো প্যান্টটা পরে যাস কাল। আমি এখন টি ভি দেখতে গেলাম।
-- জানো মা...
-- কী?
-- না কিছু না।
-- বল জলদি।
-- আজ যা একটা গোল দিয়েছি না, সবাই বলছে চিমা।
-- হয়েছে!! যাকগে শোন, সরকারদের বাড়ির মিতা এসেছিল। তোর টেস্ট পেপারটা চাইছিল। আমি তো জানি না কোথায় থাকে। কাল সকালে আসবে। দিয়ে দিস।
-- আচ্ছা।
--এবার স্নান করে পড়তে বস। কে বলবে কয়দিন বাদেই মাধ্যমিক?
স্নান করতে করতেই বাথ্রুমে অন্ধকার নেমে এল। বাইরে থেকে মায়ের গলা শোনা গেল --
"এই এক শুরু হয়েছে, রোজ জন্মভূমিটা শুধু দেখতে দেয়। তারপরেই এই এক ঘন্টার লোডশেডিং। সবিতা, সবজিগুলো রান্নাঘরে রেখে আয়। দাঁড়া, আগে একটা হ্যারিকেন জ্বালাই। বাবুর ঘরেও একটা হ্যারিকেন দিয়ে আসি। ছেলেটা পড়বে কি করে কে জানে এই গরমে?"
সন্ধ্যা সাতটায় হাওড়া বর্ধমান কর্ড লাইন সুপার এসে থামল বর্ধমান স্টেশনে। ট্রেন থেকে নেমে সামনের দিকে হাঁটা দিলেন কমলবাবু। আগে তিনি স্টেশনেই সাইকেল রাখতেন। একদিন হাওয়া খুলে যাওয়ার পর আর রাখেন না। জি টি রোডের ওপারে মদনের দোকানে রাখেন। মাসের হিসেবে টাকা পায় মদন। একদিকে সাইকেল সারানোর দোকান, আর একদিকে সাইকেল স্ট্যান্ড।
সাইকেল নিয়ে বি বি ঘোষ রোডের দিকে মোড় ঘুরতেই তাঁর চোখ গেল দুলালের চপের দোকানে। রাধা খুব ভালোবাসে এই গরম গরম চপ। বিয়ের পর অফিস থেকে ফেরার সময় প্রায়ই নিয়ে যেতেন কমলবাবু। অনেকদিন খাওয়া হয়না। অবাক কান্ড, দুলালের চেহারার তেমন পরিবর্তন হয়নি। সেই ঘামে ভেজা স্যান্ডো গেঞ্জি আর লুঙ্গি পরে এক মনে ভেজে যাচ্ছে। মনে মনে ভেবে সাইকেলটা থামালেন কমলবাবু। রাধাকে চমকে দেবেন। যদিও মুখে বলবেন বাবুর জন্য এনেছেন। কিন্তু রাধা তো বুঝবেই। আপন মনেই হেসে ফেললেন কমলবাবু।
ঠিক সেই মুহুর্তে কমলবাবুর বাড়ির কোণার ঘরে হ্যারিকেনের আলোয় সাদা কাগজে লেখা একটা চিঠি পড়ছিল তাঁর ছেলে -- "... টেস্ট পেপারের মধ্যে রেখে দিও তোমার চিঠিটা।"
মফঃস্বল নিজের মত করেই ভালোবাসে।
জানি আমার দরজার কড়া নাড়ার আওয়াজ মা বুঝতে পারে। নইলে বাড়িতে সবিতাদি থাকলেও মা নিজেই দরজা খুলতে আসে। সবিতাদি দেখলাম টি ভির সামনে বসে লাউ কাটছে। টি ভিতে এখন কোলগেটের বিজ্ঞাপণ।
-- এই খেলা শেষ করেই এলাম।
-- বাজে বকিস না, কখন সন্ধ্যা নেমে গেছে!! অন্ধকারে কিভাবে ফুটবল খেলিস? নিশ্চয় আড্ডা দিচ্ছিলি?
-- না মা, আড্ডা না। এই একটু আর কি ...
-- আজ পায়ে লাগেনি তো?
-- না আজ ঠিক আছে
টি ভিতে গান শুরু হল -- "জন্মভূমি"...
-- যা বাথ্রুমে জল রাখা আছে, স্নান করে নে। প্যান্টটা তো কাদা ভর্তি, নামিয়ে দে। কাল সকালে ধুয়ে নিস।
-- না না, আমি এটা পরে কালকেও খেলতে যেতে পারব।
-- যা বলছি শোন। তোর ঐ কালো প্যান্টটা পরে যাস কাল। আমি এখন টি ভি দেখতে গেলাম।
-- জানো মা...
-- কী?
-- না কিছু না।
-- বল জলদি।
-- আজ যা একটা গোল দিয়েছি না, সবাই বলছে চিমা।
-- হয়েছে!! যাকগে শোন, সরকারদের বাড়ির মিতা এসেছিল। তোর টেস্ট পেপারটা চাইছিল। আমি তো জানি না কোথায় থাকে। কাল সকালে আসবে। দিয়ে দিস।
-- আচ্ছা।
--এবার স্নান করে পড়তে বস। কে বলবে কয়দিন বাদেই মাধ্যমিক?
স্নান করতে করতেই বাথ্রুমে অন্ধকার নেমে এল। বাইরে থেকে মায়ের গলা শোনা গেল --
"এই এক শুরু হয়েছে, রোজ জন্মভূমিটা শুধু দেখতে দেয়। তারপরেই এই এক ঘন্টার লোডশেডিং। সবিতা, সবজিগুলো রান্নাঘরে রেখে আয়। দাঁড়া, আগে একটা হ্যারিকেন জ্বালাই। বাবুর ঘরেও একটা হ্যারিকেন দিয়ে আসি। ছেলেটা পড়বে কি করে কে জানে এই গরমে?"
সন্ধ্যা সাতটায় হাওড়া বর্ধমান কর্ড লাইন সুপার এসে থামল বর্ধমান স্টেশনে। ট্রেন থেকে নেমে সামনের দিকে হাঁটা দিলেন কমলবাবু। আগে তিনি স্টেশনেই সাইকেল রাখতেন। একদিন হাওয়া খুলে যাওয়ার পর আর রাখেন না। জি টি রোডের ওপারে মদনের দোকানে রাখেন। মাসের হিসেবে টাকা পায় মদন। একদিকে সাইকেল সারানোর দোকান, আর একদিকে সাইকেল স্ট্যান্ড।
সাইকেল নিয়ে বি বি ঘোষ রোডের দিকে মোড় ঘুরতেই তাঁর চোখ গেল দুলালের চপের দোকানে। রাধা খুব ভালোবাসে এই গরম গরম চপ। বিয়ের পর অফিস থেকে ফেরার সময় প্রায়ই নিয়ে যেতেন কমলবাবু। অনেকদিন খাওয়া হয়না। অবাক কান্ড, দুলালের চেহারার তেমন পরিবর্তন হয়নি। সেই ঘামে ভেজা স্যান্ডো গেঞ্জি আর লুঙ্গি পরে এক মনে ভেজে যাচ্ছে। মনে মনে ভেবে সাইকেলটা থামালেন কমলবাবু। রাধাকে চমকে দেবেন। যদিও মুখে বলবেন বাবুর জন্য এনেছেন। কিন্তু রাধা তো বুঝবেই। আপন মনেই হেসে ফেললেন কমলবাবু।
ঠিক সেই মুহুর্তে কমলবাবুর বাড়ির কোণার ঘরে হ্যারিকেনের আলোয় সাদা কাগজে লেখা একটা চিঠি পড়ছিল তাঁর ছেলে -- "... টেস্ট পেপারের মধ্যে রেখে দিও তোমার চিঠিটা।"
মফঃস্বল নিজের মত করেই ভালোবাসে।
bhalo, vari bhalo.. chaliye jaa Kanad..
ReplyDeletethanks Baalida
Delete