Saturday, November 24, 2018

গুগাবাবা

-- কিন্তু বাঘাদা, এই মূর্তিটার কি দরকার?
--  আমি কি জানি? হীরক রাজার মূর্তি এটা।
-- সে তো বুঝলাম, কিন্তু যে দেশে কৃষক আত্মহত্যা করছে, পাঠশালা বন্ধ, সেখানে এই মূর্তি দেখে কি হবে?
-- আরে তখন ঐ সৈন্য কি বলছে শোননি? এই মূর্তি দেখে নাকি পর্যটন হবে।
-- পর্যটন? হীরক দেশের হীরার খনি, প্রতাপগড়ের জঙ্গল, চন্দীতলার শিবমন্দির, এগুলি কি কম পড়েছিল?
-- আরে গুপী ভাই, মজার ব্যাপারটা কি জানো? লোক হচ্ছে? কারা জানো?
-- কারা?
-- এই দেশের নাগরিকরা।
-- মানে? এরাই তো কর দিয়ে মুর্তিটা বানালো। আবার এরাই টাকা দিয়ে এটা  দেখতে আসছে?
-- হ্যাঁ। কি করবে বলো ? পণ্ডিতের হুকুম।
-- এই পণ্ডিতটা কে বলতো?
-- আছে একজন। রোজ রাত ন'টার সময় এসে সবার বিচার করে। যে রাজার বিরুদ্ধে বলে সে হয় দেশদ্রোহী। এই তো ক'দিন আগে এক শ্রমিক বলল  টাকা নেই তাই মূর্তি দেখতে পারবেনা। তো পণ্ডিত কি করল জানো? তার বাড়ি  থেকে খুঁজে কয়েকটা কড়ি বার করল। শ্রমিক যত বলে ওটা চাল কেনার টাকা, পণ্ডিত শোনেনা। শ্রমিক দেশদ্রোহী প্রমাণিত হল।
--  কি  শাস্তি হয় দেশদ্রোহীর?
-- সে তোমার শুনে কাম নাই। এবারে চলো পালাই।
-- আচ্ছা পণ্ডিতরা  এরকম  কেন হয় বাঘাদা?
-- আরে পড়োনি? টাকের 'পরে পণ্ডিতেরা ডাকের টিকিট মারে।
-- তা আমাদের প্রথম কর্তব্য কি  বাঘাদা?
-- প্রথম কি জানি না। শেষ কর্তব্য এই মূর্তিটা ভাঙা। 

Sunday, November 4, 2018

পুলিনবাবুর রাগ

-- না পুলিনবাবু, আপনাকে রাগ কমাতে হবে। নাহলে আপনার প্রেশার কমবে না।
-- কিন্তু আমি তো রাগ করিনা।
-- কেন মিছে কথা বলছেন বলুন তো? আপনার স্ত্রী, ছেলে, পাড়া-প্রতিবেশী সবাই জানে আপনার রাগের কথা। আচ্ছা, শেষ কবে রেগেছিলেন বলুন।
-- শেষ কবে? এই ধরুন আজ সকালে ক্রিকেট দেখতে গিয়ে?
-- কেন? কারেন্ট গেছিল?
-- না না, এই দেখুন না শচীনটা ৯৩ এ ব্যাট করছিল, দিল ওকে রান আউট করে। রাগ হবে না বলুন?
-- না হবে না। আপনার কি মশাই শচীনের ১০০- র সাথে? ও ১০০ করলে কি আপনার আয়ু বাড়বে? দেখুন আপনার বয়স হয়েছে। রিটায়ার করেছেন। এবার এসব রাগ থামান। রাগ হলেই মনে করবেন এই রাগ করে কি আপনার আয়ু বাড়বে? বুঝেছেন?
-- হ্যাঁ ডাক্তারবাবু।

ডাক্তারখানা থেকে বেরিয়ে রিক্সা ধরলেন পুলিনবাবু।
-- কত ভাড়া নেবে?
-- সাড়ে ছয় টাকা দেবেন।
পুলিনবাবু জানেন পাঁচ টাকা ভাড়া। খানিকক্ষণ আগেও সেই ভাড়াতেই এসেছেন। তবে আজ তিনি রাগ করবেন না।
-- কেন বাবা, পাঁচ তাকাই তো ভাড়া।
-- সাড়ে ছয়ের নিচে যাব না। যেতে হলে উঠুন নইলে ছাড়ুন।
মনের মধ্যে রিক্সাওয়ালাকে দুটো গালাগাল দিলেন পুলিনবাবু। কিন্তু না, দেড় টাকার চেয়ে বেঁচে থাকা জরুরী।
-- ঠিক আছে চল।

পরদিন সকালে চা খেয়ে কাগজের জন্য অপেক্ষা করছেন পুলিনবাবু। কলকাতা থেকে কাগজ আসতে আসতে  সাতটা বেজে যায়।
-- কি গো। হাঁ করে বসে থাকবে নাকি? আমি কি আঙুল কেটে রান্না করব?

গিন্নীর ধমকে চমকে উঠলেন পুলিনবাবু। বলতে যাচ্ছিলেন তাই কর, কিন্তু না, রাগ করবেন না তিনি।

-- যাচ্ছি, যাচ্ছি, এই কাগজটা আসুক।
-- তাহলে কাগজই খেয়ো।

অগত্যা থলে নিয়ে বাজারে বেরোলেন। বাজারে হরেন মাছওয়ালা বরফের রুইকে "টাটকা, জ্যান্ত" বলে চালাচ্ছিল। অন্যদিন হলে মিনিট পাঁচেক ঝগড়া করে যান। আজ ও পথ মাড়ালেন না পুলিনবাবু। মাছ টাটকা থাকার চেয়ে তাঁর বেঁচে থাকা জরুরী।

বাড়ি ফেরার বেশ খানিকক্ষণ বাদে, সাড়ে আটটা নাগাদ কাগজ এলো। কাগজওয়ালাকে ডাকলেন পুলিনবাবু

-- কি রে আজ এত দেরী?
-- তো আমি কি প্রেসে গিয়ে কাগজ ছাপাব? 

নাহ,  জলদি কাগজ পড়ার চেয়ে বেঁচে থাকা জরুরী।

একটু বাদে ছেলে বান্টি তাঁর ঘরে এলো।

-- বাবা, গোটা পঞ্চাশেক টাকা দাও তো।
-- কেন? এই তো সেদিন একশ নিলি।
-- গিটারটা খারাপ হয়েছে। সারাব।
-- আর কতদিন গিটার নিয়ে চালাবি বাবা? এবার একটা চাকরি বাকরি দেখ।
-- উফ, বাবা, তোমার মত আমিও ঐ দশটা- পাঁচটার কেরানীগিরি করে চালাতে পারব না। আমি আর্টিস্ট। জলদি টাকাটা ছাড়ো। আজ জ্যাম আছে আমাদের।

এই কথাটা কদিন আগে বললে ছেলের গালে চড় পড়ত। আজ সামলে নিলেন। চড় মারার চেয়ে বেঁচে থাকা জরুরী।

-- আজ টাকা নেই। পরে আসিস।
-- তুমিও না বাবা। তোমার মত বাবা থাকলে ডিলান ডিলান হত না।

বিকেলে বাড়িতে হাজির হল পুলিনবাবুর মেয়ে শম্পা। সঙ্গে শম্পার ছেলে সানি। শম্পার শ্বশুরবাড়ি কলকাতায়। মাস দু-তিন অন্তর আসে বাবা মায়ের কাছে। অন্যসময় জামাই সত্যব্রতও আসে। এবার জামাই ছুটি পায়নি।

শম্পাদের দেখে খুশীতে ভরে উঠল পুলিনবাবুর মুখ। সানিকে কোলে নিয়ে বারান্দায় গেলেন খেলা করতে।

-- বল তো দাদুভাই, আমি কে?
-- দাদু রাগী।
-- ঠিক করে বল দাদুভাই, আমি কে?
-- তুমি রাগী দাদু।

আসলে হয়েছে কি সানি ভীষণ দুষ্টু। শম্পা তাই রাস্তায় বলতে বলতে এসেছে
-- দাদু কিন্তু ভীষণ রাগী। একদম দুষ্টু করবে না ওখানে গিয়ে।

এবার একটু বিরক্ত হয়ে পুলিনবাবু আবার বললেন
-- না দাদুভাই, আমি রাগী  নই। আমি তো তোমার দাদু।
-- না, তুমি রাগী। রাগী দাদু।

এভাবে বার দশেক চলার পর আর সহ্য  করতে পারলেন না পুলিনবাবু।
-- কি? আমি রাগী? সারাদিন রাগ চেপে আছি। আর আমি রাগী!!! 

তাঁর চিৎকারে  বারান্দায় ছুটে এল শম্পা।
-- সানি, আবার বাঁদরামো করেছিস? কতবার বলেছি দাদু রাগী, দুষ্টু করিস না।

Friday, November 2, 2018

সত্যসুন্দর

(ও হেনরির একটি গল্প নিজের মত করে লিখলাম।)

নাহ, এভাবে হবে না। এবার মোহনপুরে যা ঠাণ্ডা পড়েছে, তাতে এভাবে বেঞ্চে  শুয়ে চলবেনা। গতবছর অবধি এক বুড়ি পিসী ছিল হারুর। এবছর সেই পিসীও নেই। পিসতুতো ভাইরা জেল খাটা কয়েদিকে বাড়িতে আশ্রয় দিতে নারাজ। অগত্যা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এই পার্কের বেঞ্চেই কাটাচ্ছে হারু। পুজো - কালীপুজো সব শেষ। এবার আস্তে আস্তে ঠাণ্ডা পড়ছে। কলকাতায় লোকে বোধহয় এখনো ফ্যান চালাচ্ছে। কিন্তু উত্তরবঙ্গের এই ছোট জেলা শহরে এরমধ্যেই লোকের পরনে হাতকাটা সোয়েটার। কি করা যায় এই ঠাণ্ডায় ভাবতে ভাবতে হারু ঠিক করল -- নাহ, জেলেই ফিরে যাই। যে জেলে যাওয়ার জন্য তার এত বদনাম, সেই জেলই তাকে এই ঠাণ্ডা থেকে বাঁচাবে। আর কিছু না হোক, দু'বেলা খাবার পাবে, এমনকি চাইলে হয়ত একটা কম্বলও দিতে পারে।

পার্কে এই বিকেলবেলা বেশ কিছু লোক ঘুরতে এসেছে। কয়েকজন বৃদ্ধ নিজেদের মধ্যে আড্ডা দিচ্ছেন। কিছু বাচ্চা বল নিয়ে খেলছে। মাঠে পাতা পড়ে আছে অনেক। হয়ত পরিষ্কার করার লোক আজ আসেনি। হয়ত বা লোকই নেই। আকাশের দিকে চেয়ে হারু দেখল সন্ধ্যা নামতে চলেছে। এইবেলা বেরিয়ে পড়া ভালো।

জেলে যাওয়ার জন্য প্রথমেই যেটা দরকার সেটা হল একটা গুণ্ডামি, বা চুরি, বা ডাকাতি, বা খুন। খুন অবশ্য হারু কোনদিন করেনি। ডাকাতিও না। ইচ্ছে আছে একবার ব্যাঙ্ক ডাকাতি করার। চুরি করতেই পারে। তবে আজ একদমই সেসব ইচ্ছে করল না। "যাই একটু হুজ্জুত করি, আমাকে জেলে ঢোকাবেই।"

প্রথমেই বাসে উঠল হারু। এই জেলা শহরে বাস বেশ কম। তাও আছে কতিপয়। বাস প্রায় ফাঁকাই ছিল। উঠেই একটা সিট পেয়ে গেল হারু। জানালার ধারে নয় অবশ্য। পাশে এক বয়স্কা মহিলা বসে ঢুলছিলেন। খানিকক্ষণ বাদেই কন্ডাক্টার এসে টিকিট চাইলেন। হারু "দিচ্ছি দিছি" বলায় এগিয়ে গেলেন কন্ডাক্টার।  এভাবে বেশ কয়েকবার হওয়ার পর কন্ডাক্টারবাবু বিরক্ত হয়ে বললেন

"আর দাদা, অনেক তো দিচ্ছি দিচ্ছি করলেন, এবার দিন।"
"না আসলে, আমার কাছে টাকা নেই।"
"নেই মানে? তাহলে এতক্ষণ ধরে ভণ্ডামি করছিলেন। জানেন বাসের ভাড়া না দিলে জেল হতে পারে?"
"হোক না, মানে  ..."

এই সময় পাশের সিটের ঘুমন্ত মহিলা বলে উঠলেন -- "কত ভাড়া,  আমি দিচ্ছি।"

উনি যে কখন ঘুম ছেড়ে উঠেছেন হারু খেয়ালই  করেনি। বোধহয় কন্ডাক্টারের চেঁচামিচিতে।

"না,  না, আপনি কেন?" -- হারু জেলে যাওয়ার এরম সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ।

"তা কেন বাবা, তুমি তো আমার ছেলের বয়সী। জানো আমার ছেলে আজ থেকে পাঁচ বছর আগে আমায় ছেড়ে কোথায় চলে গেল, আর ফেরেনি..."

একেই টিকিট কেটে দেওয়ায় রাগ, তার উপর এই গল্প। হারু বাধ্য হয়ে পরের স্টপেজে নেমে পড়ল। নাহ, খিদে পেয়েছে। একটা কিছু খেতে হবে। হ্যাঁ, ভালো প্ল্যান এসেছে মাথায়। আগে খাওয়া যাক। তারপর নাহয় টাকা নেই বললে যদি জেলে দেয়।

প্রথমেই শহরের সবচেয়ে নামী রেস্তোরাঁতে গেল হারু। সেখানে অবশ্য তার ছেঁড়া কাপড় দেখে দারোয়ান তাড়িয়ে দিল। এবার পাশের একটা ভাতের হোটেলে গেল হারু। এখান থেকে জেলে যাওয়ার সুযোগ কম। কিন্তু আগে খাওয়া তো যাক।

ঢুকে বেয়ারাকে জিজ্ঞেস  করল হারু -- "মাছ কি কি আছে?"

"আজ্ঞে, রুই, কাতলা, কই, ট্যাংরা, পাবদা।"

"যাও দেখি, ভাত আনো আর সঙ্গে এক প্লেট কই আর এক প্লেট ট্যাংরা।"

আহ, আজ ভালো করে খাওয়া যাবে। মালিকটা বেশ নাদুস নুদুস একটা  লোক। হয়ত একটু মারামারি করলে পুলিশ ডাকবে। টেলিফোনও আছে দেখছি দোকানে। মালিক কালো ফোন কানে নিয়ে কার সঙ্গে যেন কথা বলছে।

ভাত, আলুপোস্ত, ডাল, ঝিরঝিরে আলুভাজা আর দু প্লেট মাছ এল টেবিলে। সবে পোস্ত দিয়ে ভাত মাখতে যাবে হারু, এই সময় মালিক হঠাৎ ফোন রেখে তার দিকে এগিয়ে এলো। একিরে বাবা, এই লোকটা কি জানে হারু চোর?

"আপনি দাদা ঈশ্বর।" -- হারুর এঁটো  হাতদুটো জড়িয়ে ধরল  মালিক।

"সেকি? কেন?"

"আমার বউ পোয়াতি। কিন্তু কি এক অসুখের জন্য ডাক্তার  বলেছিল বাচ্চা নাও বাঁচতে পারে। এখনি আমার শালা ফোন করে জানাল আমার মেয়ে হয়েছে। বউ ভালো আছে। আমি তো দোকান ছেড়ে যেতে পারছি না। তাই ভীষণ চিন্তায় ছিলাম। আপনি এলেন আর শালার ফোন এল। ওরে, এই দাদার কাছ থেকে আর পয়সা নিস না। দাদা, শুধু মাছ খাচ্ছেন কেন? আমাদের এখানকার মাংস খেয়ে যান।"


রাতে এসে সেই পার্কের বেঞ্চে শুল হারু। দুনিয়াটাই শালা বেইমান। জেলে যাব, তাও যেতে দেবেনা। যাকগে ঘুম দি।

"সকালে ঘুম ভাঙল গানের আওয়াজে। পার্কের পাশেই মিশন স্কুল। সেখানে সকালবেলা প্রার্থনা সঙ্গীত হয়। গানটা চেনা চেনা না? হ্যাঁ এটা তো আনন্দলোকে, মঙ্গলালোকে। হারুর মা এই গানটা গাইতে ভীষণ ভালোবাসতেন। মায়ের একটা গানের স্কুল ছিল। বাবার ফ্যাক্টরি লক-আউট হওয়ায় বাবা যখন আত্মহত্যা করলেন, তখন মায়ের স্কুলটাও গেল, হারুর পড়াশুনাও। তাও পাড়ায় ছোটখাটো কাজ করে চলত হারুর। মা লোকের বাড়ি কাজ করতেন। কিন্তু এভাবে চলছিল না। তাই পাড়ার গুলেদার কাছে হারু  মহাবিদ্যার  ট্রেনিং নিল। প্রথমবার জেলে যাওয়ার সময় মায়ের সঙ্গে দেখা করেনি হারু। লজ্জায়। ফিরে এসে আর মায়ের  দেখা পায়নি হারু।

আজ এই পার্কের গেটে বসে মায়ের  কথা মনে পড়ে গেল হারুর। গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে গেল স্কুলের পাঁচিলের দিকে। মনটা আজ সকালে যেন কেমন শান্ত হয়ে পড়েছে। আচ্ছা, হারু কি সারাজীবন চোর হয়ে থাকবে? কেন, ভালো কিছু তো করতে পারে। শীত কাটানোর জন্য জেলে যাওয়ার কি দরকার? ঐ ভাতের হোটেলের মালিককে গিয়ে বললে হয় না বেয়ারার চাকরি দিতে। তেমন হলে রাতটা ঐ হোটেলের বেঞ্চিতেই কাটাবে হারু। মালিক তো কাল কত খাতির-যত্ন করলেন, হয়ত বললে এই চাকরিটায় দিয়ে দেবেন। বলেই দেখি না।

"কে  এখানে হারু চোর না?"

কখন পাশে এক পুলিশ এসে দাঁড়িয়েছে দেখতেই পায়নি হারু।

"কি করছিস স্কুলের গেটের বাইরে?"

"না, স্যার, মানে এই গান শুনছিলাম।"

"গান শুনছিলাম। গুল মারার আর জায়গা পাওনি। আজ স্কুলে রাজ্যপাল আসবেন শুনেই চলে এসেছ? ভিড়ের মধ্যে যদি কিছু গছানো যায়, তাই তো? চল, জেলে চল। ওটাই তোর যায়গা। ওখানে গিয়ে গান শুনিস। এই, কে আছিস, এটাকে গাড়িতে তুলে চালান দে।"