Friday, October 18, 2019

শীতের বিকেল

ডালাস শহরে হাল্কা ঠাণ্ডা পড়েছে। আজ বিকেলে ডিপার্টমেন্ট থেকে বাড়ির দিকে রওয়ানা দিচ্ছি, এমন সময় চোখে পড়ল সামনের গাছের উপর বিকেলের সূর্যর আলো। সবুজ পাতার উপর এক সোনালি রং। মনে পড়ে গেল আমার ছোটবেলার স্কুল জীবনের কথা। তারাবাগ বাস স্ট্যান্ড থেকে বাড়ি ফিরতাম তারাবাগ মাঠের উপর দিয়ে। সে জায়গাটা হেঁটে হেঁটে এক মেঠো পথে পরিণত হয়েছিল। শীতের দিনে বাড়ি ফেরার সময় চোখ থাকত ঐ গাছগুলির উপরে। যতক্ষণ আলো, ততক্ষণ খেলা হবে। ৫ ওভার, বা ৩ ওভারের দুটো ম্যাচ খেলা হত। কখনো লোক কম হলে ওয়ান ড্রপ ওয়ান হ্যান্ড। মনে আছে বাড়ি ফিরলেই মা কানে হাত দিয়ে বলত -- "কানটা ঠাণ্ডা, একটু আগে আসতে পারিস না?"

গেন্সভিলে যখন পড়তে যাই, তখনো শীতের বিকেল এক আলাদা আমেজ আনত। একেই গেন্সভিল প্রায় আমার দ্বিতীয় বাড়ি। মনে পড়ে গত বছর এক কাজে ওহায়োর এক শহরে গেছি। দেখি এক জায়গায় লেখা I-75. ম্যাপ খুলে দেখি এই সেই রাস্তা যা সোজা গেন্সভিল গেছে। কতবার গেন্সভিল থেকে অন্য কোথাও যেতে গেলে এই রাস্তা ধরে যেতাম। আজ সেই রাস্তাকে এত দূরে দেখে মনে হল যেন বাড়ি ফেরার রাস্তা দেখছি। যাই হোক, গেন্সভিলে যখন ল্যাব থেকে বিকেলে বাড়ি ফিরতাম, তখনো এই গাছের পাতায় শেষ বিকেলের আলো দেখে মনে পড়ত তারাবাগের কথা। হাল্কা শীতে ঠোঁট ফাটে, একটু বেশি ঘুম পায়। আমাদের ডিপার্টমেন্টের পাশেই ছিল সেঞ্চুরি টাওয়ার। টাওয়ারের গাইয়ে সেই আলো পড়ত। পাশেই ছিল মিউজিক ডিপার্টমেন্ট। সেখানকার ছাত্রদের গানের প্র্যাকটিসের সময় তখন। পাতা ঝরানো সেই বিকেলে, ঐ গানের তালে, ঐ আলোর খেলায় বার বার বাড়ির জন্য মন খারাপ করত। আর কোনদিন কি তারাবাগের মাঠে খেলতে পারব?

আজও করল।


No comments:

Post a Comment