গত ক'দিন ধরে ডালাসের আকাশ মুখ গোমড়া করে আছে। তার মধ্যে বেশ ঠাণ্ডা আর সঙ্গে বৃষ্টি। গতকাল তো সকালে -১ সেলসিয়াস ছিল। দুপুরে মিটিঙের ফাঁকে কফি নিয়ে সোফায় বসে বাইরের দিকে চেয়ে থাকি। ঠাণ্ডায় বারান্দায় যেতে পারিনা। পর্দা সরানো থাকে। কাঁচের ফাঁক দিয়ে তাকাই। বৃষ্টি থেমে গেলে চারদিক কেমন যেন থম থম করে। বাড়ির সামনে লাল হয়ে যাওয়া পাতা যেন ভয়ে কাঁপছে। আশেপাশে লোকজন কম। শুধু কিছুই গাড়ি। তার মধ্যে আরোহীকে দেখা যায়না। তাই মনে হয় যেন এক রোবট যুগে আছি, যেখানে শুধুই যন্ত্র।
এই মেঘলা দিনে একাকীত্ব কিন্তু বেশী করে দানা বাঁধে। প্রিয়জনকে হারানোর যন্ত্রণা সেই কষ্টকে বাড়িয়ে দেয়। কোথাও যেন ভালোবাসা আর অধিকার এক হয়ে যায়। পুরোন স্মৃতি, কিছু অনুশোচনা, আর বার বার ভুল শুধরে নেওয়ার ব্যর্থ ইচ্ছে। মায়া। ভালোবাসা, অধিকার না মায়া। ছোটবেলায় এক টাকার মৌরি লজেন্সের সঙ্গে পাওয়া প্লাস্টিকের স্কুটারের চাকা ভেঙ্গে গেলে কেঁদে ভাসাতাম। আজ হেলায় এক বছরের পুরনো দামী মোবাইল ফোন পাল্টে ফেলি।
মেঘলা দিনে একা হতে চাওয়ার আকাঙ্কা সবার হয়না। কেউ কেউ আবার এর থেকে বেরোতে চায়। মন খারাপ লাগলে চেষ্টা করে কীভাবে ভিড়ে মিশে যাওয়া যায়। নিজের অস্তিত্বের বৈধতা রক্ষার দায় এসে যায় মনের গভীরে। তাও ভালো এখন সোশাল নেটোয়ার্ক আছে। নিজেকে ভেঙ্গে, নতুন করে সংগঠন করে, একা না হতে চাওয়া, সবাইকে বলা "এই দেখো, আমি আছি, আমাকে দেখো" -- নিজের জীবনের প্রতিপাদন দরকার পরে।
তবু আমাদের মত লোকেরা বাঁচে, ভাবে কবে ঐ মেঘলা আকাশ এসবে। কারুর কাছে না, নিজের কাছে নিজের কষ্ট মেলে ধরবে। একা থাকবে। একাকীত্বের সুখ সকলে বোঝেনা।