শীতকালে গোধূলিবেলা আসে না, ঝুপ করে অন্ধকার নামে। সাত ওভারের ক্রিকেট খেলায় দ্বিতীয় ইনিংস কেউ খেলতে চায় না, ব্যাটিং শেষ করা যায় না।
এ তো আর গ্রীষ্মকাল না, সে লম্বা বিকেলবেলাও পাওয়া যাবে না। গ্রীষ্মের বিকেল দীর্ঘস্থায়ী, সে তুমি চাও বা না চাও। তোমার মন ভাল থাকলে তাকে উপভোগ করো; মন খারাপ থাকলে তাকে অভিশাপ দিয়ে সন্ধ্যার প্রতীক্ষা করো। এ বর্ষার বিকেলও না, যা তোমার মন খারাপ করে দেবে। এ শীতকালের বিকেল -- তোমার মনের তোয়াক্কা সে করে না, শুরু হতে না হতেই শেষ হয়ে যাবে, তোমাকে খুশি করা বা তোমার মন খারাপ করা তার দায়িত্ব নয়।
বুঝতে পারলাম ঠোঁটটা ফেটেছে। সদ্য শীতের প্রথম ঠোঁট ফাটা নয় যে নোনতা রক্তের স্বাদ লেগে থাকবে। শেষ পৌষের ছোঁয়ায় ঠোঁটটা সাদা হয়ে এসেছে। বাঁ হাতে সাইকেলের হ্যান্ডেল ধরে রেখে ডান হাতে মাফলারটা জড়িয়ে নিলাম ভাল করে। উত্তুরে শীতের হাওয়া যেন ঝাপটা মারছে। পুরো রাস্তায় দুটি সাইকেল। আর কোন যানবাহন বা মানুষও চোখে পড়ে না। আমার সবুজ রঙের হিরো জেটের সামনে এক তন্বী। প্রায় অনেকক্ষণ ধরেই আমার সামনে চলেছেন তিনি। পরনে সাদার ওপর গোলাপি ফুলের ছাপ চুড়িদার ও বাদামী সোয়েটার। লম্বা বিনুনি পিঠের ওপর এলিয়ে পরেছে। মাথায় কোন ওড়না বা স্কার্ফ নেই। ঠাণ্ডা লাগে না?
চমকে উঠলাম। আচ্ছা, সেও তো মাথা ঢাকত না। সেদিন তারো পরনে ছিল এরকমই এক চুড়িদার ও সোয়েটার। এমনকি বিনুনিটিও ......। আমি যদি সেদিন মাফলার জড়াই নি। রক্ত গরম, ঠাণ্ডা লাগেনা, তাই মাফলারও লাগেনা -- এই কি বোঝাতে চেয়েছিলাম? গত কুড়ি বছরে আমার সাইকেলের পরিবর্তন না হলেও আমার শরীরের হয়েছে -- আজ আমি মাফলার পরিহিত।
আচ্ছা, এগিয়ে যাবো? পাশে গিয়ে তাকাবো তার দিকে? এই মেয়েটি হয়ত সে নয় -- হতেও তো পারে সে!! তাহলে কি সেদিনকার মতই তাকাবে আমার দিকে? ডান চোখের কোনের তিলটির পাশের চামড়া কি একিই ভাবে কুঁচকাবে? ভ্রু পল্লবে কি দেখা দেবে চিন্তার রেখা? সোয়েটারের সঙ্গে সেফটিপিনে বাঁধা ওড়না কি ঠিক করে নেবে?
সেই মুহূর্তে, যে মুহূর্তে পাড়ার মাঠের ছেলেরা ক্রিকেট ছেড়ে উইকেট তুলতে যায়, যে মুহূর্তে ট্রিঙ্কাসের গায়ক "মনে পড়ে রুবি রায়" ধরেন, যে মুহূর্তে লোকাল ট্রেনের নিত্যযাত্রী মাঙ্কি ক্যাপটি জড়িয়ে চা ওয়ালার কাছে আর এক কাপ চা চায় "২ টো ডায়মন্ড" ডাক দিয়ে, যে মুহূর্তে পাড়ার ওষুধের দোকানের আলোগুলো জ্বলে ওঠে, রোলের দোকানের প্রথম ডিমটা ফেটানো হয়, যে মুহূর্তে অলস ভাবে শুয়ে শুয়ে পাশের বাড়ির তুলশিতলায় সন্ধ্যাপ্রদীপের শিখা দেখে অপূর্বর অপর্ণার কথা মনে পড়ে -- সেই মুহূর্তে আমি সাইকেলটা এগিয়ে নিলাম, তার দিকে না তাকিয়েই বললাম -- "সেদিন চিঠিটা নিলেই পারতে, কস্তূরী।"
এ তো আর গ্রীষ্মকাল না, সে লম্বা বিকেলবেলাও পাওয়া যাবে না। গ্রীষ্মের বিকেল দীর্ঘস্থায়ী, সে তুমি চাও বা না চাও। তোমার মন ভাল থাকলে তাকে উপভোগ করো; মন খারাপ থাকলে তাকে অভিশাপ দিয়ে সন্ধ্যার প্রতীক্ষা করো। এ বর্ষার বিকেলও না, যা তোমার মন খারাপ করে দেবে। এ শীতকালের বিকেল -- তোমার মনের তোয়াক্কা সে করে না, শুরু হতে না হতেই শেষ হয়ে যাবে, তোমাকে খুশি করা বা তোমার মন খারাপ করা তার দায়িত্ব নয়।
বুঝতে পারলাম ঠোঁটটা ফেটেছে। সদ্য শীতের প্রথম ঠোঁট ফাটা নয় যে নোনতা রক্তের স্বাদ লেগে থাকবে। শেষ পৌষের ছোঁয়ায় ঠোঁটটা সাদা হয়ে এসেছে। বাঁ হাতে সাইকেলের হ্যান্ডেল ধরে রেখে ডান হাতে মাফলারটা জড়িয়ে নিলাম ভাল করে। উত্তুরে শীতের হাওয়া যেন ঝাপটা মারছে। পুরো রাস্তায় দুটি সাইকেল। আর কোন যানবাহন বা মানুষও চোখে পড়ে না। আমার সবুজ রঙের হিরো জেটের সামনে এক তন্বী। প্রায় অনেকক্ষণ ধরেই আমার সামনে চলেছেন তিনি। পরনে সাদার ওপর গোলাপি ফুলের ছাপ চুড়িদার ও বাদামী সোয়েটার। লম্বা বিনুনি পিঠের ওপর এলিয়ে পরেছে। মাথায় কোন ওড়না বা স্কার্ফ নেই। ঠাণ্ডা লাগে না?
চমকে উঠলাম। আচ্ছা, সেও তো মাথা ঢাকত না। সেদিন তারো পরনে ছিল এরকমই এক চুড়িদার ও সোয়েটার। এমনকি বিনুনিটিও ......। আমি যদি সেদিন মাফলার জড়াই নি। রক্ত গরম, ঠাণ্ডা লাগেনা, তাই মাফলারও লাগেনা -- এই কি বোঝাতে চেয়েছিলাম? গত কুড়ি বছরে আমার সাইকেলের পরিবর্তন না হলেও আমার শরীরের হয়েছে -- আজ আমি মাফলার পরিহিত।
আচ্ছা, এগিয়ে যাবো? পাশে গিয়ে তাকাবো তার দিকে? এই মেয়েটি হয়ত সে নয় -- হতেও তো পারে সে!! তাহলে কি সেদিনকার মতই তাকাবে আমার দিকে? ডান চোখের কোনের তিলটির পাশের চামড়া কি একিই ভাবে কুঁচকাবে? ভ্রু পল্লবে কি দেখা দেবে চিন্তার রেখা? সোয়েটারের সঙ্গে সেফটিপিনে বাঁধা ওড়না কি ঠিক করে নেবে?
সেই মুহূর্তে, যে মুহূর্তে পাড়ার মাঠের ছেলেরা ক্রিকেট ছেড়ে উইকেট তুলতে যায়, যে মুহূর্তে ট্রিঙ্কাসের গায়ক "মনে পড়ে রুবি রায়" ধরেন, যে মুহূর্তে লোকাল ট্রেনের নিত্যযাত্রী মাঙ্কি ক্যাপটি জড়িয়ে চা ওয়ালার কাছে আর এক কাপ চা চায় "২ টো ডায়মন্ড" ডাক দিয়ে, যে মুহূর্তে পাড়ার ওষুধের দোকানের আলোগুলো জ্বলে ওঠে, রোলের দোকানের প্রথম ডিমটা ফেটানো হয়, যে মুহূর্তে অলস ভাবে শুয়ে শুয়ে পাশের বাড়ির তুলশিতলায় সন্ধ্যাপ্রদীপের শিখা দেখে অপূর্বর অপর্ণার কথা মনে পড়ে -- সেই মুহূর্তে আমি সাইকেলটা এগিয়ে নিলাম, তার দিকে না তাকিয়েই বললাম -- "সেদিন চিঠিটা নিলেই পারতে, কস্তূরী।"
এটা পড়ে অনেকগুলো মন খারাপ করা ভাল স্মৃতি ভেসে এলো। খুব সুন্দর লিখেছ দাদা। :)
ReplyDeleteThanks Rohit. regular poris amar blog
Deletekichuuu :)
ReplyDeletethanks Prateek
Deleteঅব রুলায়েগা ক্যা?
ReplyDelete:)
DeleteWhat is life if not a endless succession of choices made and unmade?
ReplyDeleteখুব ভালো লেখা কনাদ। ইমেজারিগুলো, বিশেষত "যে মুহূর্তে..." অংশগুলি ভীষণ ভিভিড। অারও লেখা চাই। :)
thanks a lot Somdeb
Deleteখুব ভালো হয়েছে রে| আরও লেখ|
ReplyDeleteথ্যাঙ্ক ইউ
Deletechomotkar -PB
ReplyDeleteধন্যবাদ প্রদীপ্ত
Deleteবলছিলাম না? বড্ডো মায়া মাখা। এটার কথাই মনে পড়ছিল তখন।
ReplyDeleteবলছিলাম না? বড্ডো মায়া মাখা। এটার কথাই মনে পড়ছিল তখন।
ReplyDeleteহেঁহেঁ, মফস্বল একটা নেশা - সিংগল মল্ট তার কাছে নস্যি :)
ReplyDelete