তখন বোধহয় ক্লাস থ্রিতে পড়ি। জন্মদিনে উপহার পেলাম শিবরামের ছোটদের গল্প। প্রথম গল্প "বাড়ি থেকে পালিয়ে"। গোগ্রাসে গিলে ফেললাম। অদ্ভুত ভালো লাগল। আমার একটা স্বভাব হচ্ছে কোন গল্প ভালো লাগলে বার বার পড়ি। "বাড়ি থেকে পালিয়ে" যে কতবার পড়েছি তার হিসেব নেই। কয়েক বছর বাদে "ছুটি ছুটি" তে ঘটকবাবুর সিনেমাটা দেখলাম। শুনেছিলাম ঘটকবাবু নামকরা পরিচালক, তার উপর আমার প্রিয় গল্প, তাই প্রত্যাশা ছিল গগনচুম্বী। কিন্তু সিনেমা দেখে ভীষণ হতাশ হলাম। একেবারেই পছন্দ হল না; সত্যি কথা বলতে কি বেশ খারাপ লেগেছিল।
বহু বছর বাদে সিনেমাটা আবার দেখলাম। গল্পটা এর মাঝে কতবার যে পড়েছি তার হিসেব নেই। এবারো সিনেমাটা ভালো লাগল না। এর মধ্যে আমি ঘটকবাবুর বাকি সব সিনেমা দেখেছি। কেমন লেগেছে সে আর নতুন করে বলার কিছু নেই। কেন এই সিনেমাটা আমার ভালো লাগল না ভাবছিলাম। মনে হয় আমি নিজেই "বাড়ি থেকে পালিয়ে" নিয়ে একটা সিনেমা বানিয়ে ফেলেছি মনে মনে। ঘটকবাবু যদি গল্প না পাল্টাতেন তাহলেও হয়ত আমার সিনেমার সঙ্গে ওনার সিনেমার মিল হত না। কারণ আমার সিনেমায় আমি নিজেই কাঞ্চন। আমি যেন স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি ওষুধের দোকানে দাঁড়িয়ে আমি খবরের কাগজে মহাত্মা গান্ধীর "স্বরাজ" আনার কথা পড়ছি। চব্বিশ ঘণ্টা উপবাসের পর রাস্তার দোকানের ছাতু আমার অমৃত লাগে। দেশবন্ধুর ভলেন্টিয়ারদের সঙ্গে সারা কলকাতা শহরটা যেন আমি বহুবার হেঁটেছি। না ঋত্বিকবাবু, আপনি এই সিনেমার সঙ্গে টেক্কা দিতে পারবেন না।
No comments:
Post a Comment