-- মেট্রোতে ভিড় ছিল?
-- সবসময় থাকে। এতো আর করোনাভাইরাসের সময় না, যে ফাঁকা থাকবে।
-- তা বটে। এদিকে আয়।
-- আর কতদূর রে? ঘেমে গেলাম তো?
-- দেখুন ম্যাডাম, ঘামের দোষ আমাকে দেবেন না। তাহলে কলকাতায় না থেকে আমাদের দার্জিলিং-এ থাকা উচিত।
-- সবসময় মজা তোর। এই তোর মায়ের আপত্তি ছিল না, ঠিক বলছিস তো?
-- হ্যাঁ রে। মা তোর ছবি দেখে বেশ ইম্প্রেসড। তার উপর আমার কাছে তোর বাকি গুন শুনে তো কথাই নেই।
-- আর তোর বাবা কিছু বলবেন না বল?
-- দেখ বাবার কথা তো তোকে বলেছি। মাথার গণ্ডগোলটা আজকাল ভীষণ বেড়ে গেছে। এই লকডাউনের সময় বাড়ি থেকে থেকে আরো বেড়েছে। আমরা চিন্তায় থাকি রে। বাবা কিছু ভুল ভাল বললে প্লিজ মাইন্ড করিসনা।
-- আরে না না। তুই সঙ্গে থাকিস প্লিজ।
-- আমৃত্যু থাকব।
বাড়ির সবুজ দরজায় টোকা দেওয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে দরজা খুললেন সমরের মা। সমরের মোবাইলে ওনার ছবি আগেই দেখেছিল অনন্যা। কাজেই চিনতে অসুবিধা হলনা। পরনে সবুজ রঙের তাঁতের শাড়ি। চোখে চশমা।
-- এসো এসো, আসতে কষ্ট হয়নি তো? এত দূর থেকে এলে।
-- না না।
এই বলেই ওনাকে প্রণাম করল অনন্যা।
-- আহা থাক থাক, কি লক্ষ্মী মেয়ে।
অনন্যার দু গালে হাত বুলিয়ে চিবুক ছুঁয়ে আদর করলেন সমরের মা। এত সহজে আপন করে নেবেন ভাবেনি অনন্যা। যেন কতদিনের চেনা। এত নরম করে গালে হাত বুলোলেন যে দূরত্ব বোধহয় এক মূহুর্তে ঘুচে গেল।
-- এসো এসো বসো এখানে।
বাইরে ঘরে দু' সেট সোফা। বাদামী রঙের। সামনে কাঠের সেন্টার টেবিল। ওপরটা কাঁচের। টেবিলের নিচে কিছু ম্যাগাজিন রাখা। একটা সানন্দা চোখে পড়ল অনন্যার। সামনে টি ভি। বন্ধ ছিল। ঘরের একদিকে একটা বড় বইয়ের র্যাক। এটির কথাই বোধহয় সমর বলেছিল। সমর ভীষণ বই পড়তে ভালোবাসে। অনন্যাও। সেভাবেই ওদের আলাপ অবশ্য।
সোফায় অনন্যার পাশে বসলেন সমরের মা। শুরু হল গল্পগুজব। বাড়িতে কে কে আছে, বাবা কোথায় চাকরি করেন, এসব। ভদ্রমহিলাকে ভীষণ ভালো লাগছিল অনন্যার। কথা বলতে বলতে বার বার ওর হাতে, পায়ে হাত রাখছিলেন। যেন আজকের আলাপ না।
এর মধ্যে হঠাত পাঞ্জাবী পাজামা পরা এক ভদ্রলোক ঘরে ঢুকলেন। ভিতরের কোন ঘরে ছিলেন হয়ত। এসেই সবার দিকে একবার ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থেকে
-- খাবার কই, খাবার। বাবু খাবার আনিসনি?
বলে চেঁচালেন। অনন্যা বুঝতে পারল ইনি সমরের বাবা। প্রণাম করবে বলে উঠছিল, কিন্তু সমর তার আগেই ওনাকে ভিতরের ঘরে নিয়ে গেল। ওর মা বলতে লাগলেন
-- কি বলি বলো, আগে তবু বেরোত, আজকাল বাড়িতে বন্ধ থেকে থেকে মাথাটা একেবারে গেছে।
এবার নিজে থেকেই ওনার হাত ধরল অনন্যা।
-- না না কাকিমা, কিচ্ছু ভাববেন না। আমি শিওর কাকু সুস্থ হয়ে উঠবেন শিগগিরি।
-- তোমার মুখে ফুল চন্দন পড়ুক মা। দাঁড়াও আমি চা নিয়ে আসি। সমরের কাছে শুনেছি তুমি বই পড়তে খুব ভালোবাসো। সমরের বই দেখবে? ঐ দেখো র্যাকটা।
-- হ্যাঁ কাকিমা, আমি দেখছি।
এবার আস্তে আস্তে উঠে বইয়ের র্যাকের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো অনন্যা। কত বই। তার পড়া বই যেমন আছে, না পড়াও আছে। ওটা কি, হেনরি ফ্রেড্রিকের সংস অব সলিটিউড। দেখি।
বইটা হাতে নিয়ে দেখছিল অনন্যা যখন ওর মাথায় আঘাত হানা হল। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ল সে। বইটি হাত থেকে ছিটকে পড়ল। আরো বার কয়েক আঘাত করে থেঁতলে দিয়ে থামল সমর। এর বেশী মারলে বোধহয় ঘিলু বেরিয়ে আসবে।
ভিতর থেকে সমরের বাবার গলা শোনা গেল
-- বাবু, খাবার এনেছিস? খাবার কই বাবু?
সমর এবার বিরক্ত গলায় বলল
-- দাঁড়াও মাকে রান্না করতে দাও।
-- সবসময় থাকে। এতো আর করোনাভাইরাসের সময় না, যে ফাঁকা থাকবে।
-- তা বটে। এদিকে আয়।
-- আর কতদূর রে? ঘেমে গেলাম তো?
-- দেখুন ম্যাডাম, ঘামের দোষ আমাকে দেবেন না। তাহলে কলকাতায় না থেকে আমাদের দার্জিলিং-এ থাকা উচিত।
-- সবসময় মজা তোর। এই তোর মায়ের আপত্তি ছিল না, ঠিক বলছিস তো?
-- হ্যাঁ রে। মা তোর ছবি দেখে বেশ ইম্প্রেসড। তার উপর আমার কাছে তোর বাকি গুন শুনে তো কথাই নেই।
-- আর তোর বাবা কিছু বলবেন না বল?
-- দেখ বাবার কথা তো তোকে বলেছি। মাথার গণ্ডগোলটা আজকাল ভীষণ বেড়ে গেছে। এই লকডাউনের সময় বাড়ি থেকে থেকে আরো বেড়েছে। আমরা চিন্তায় থাকি রে। বাবা কিছু ভুল ভাল বললে প্লিজ মাইন্ড করিসনা।
-- আরে না না। তুই সঙ্গে থাকিস প্লিজ।
-- আমৃত্যু থাকব।
বাড়ির সবুজ দরজায় টোকা দেওয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে দরজা খুললেন সমরের মা। সমরের মোবাইলে ওনার ছবি আগেই দেখেছিল অনন্যা। কাজেই চিনতে অসুবিধা হলনা। পরনে সবুজ রঙের তাঁতের শাড়ি। চোখে চশমা।
-- এসো এসো, আসতে কষ্ট হয়নি তো? এত দূর থেকে এলে।
-- না না।
এই বলেই ওনাকে প্রণাম করল অনন্যা।
-- আহা থাক থাক, কি লক্ষ্মী মেয়ে।
অনন্যার দু গালে হাত বুলিয়ে চিবুক ছুঁয়ে আদর করলেন সমরের মা। এত সহজে আপন করে নেবেন ভাবেনি অনন্যা। যেন কতদিনের চেনা। এত নরম করে গালে হাত বুলোলেন যে দূরত্ব বোধহয় এক মূহুর্তে ঘুচে গেল।
-- এসো এসো বসো এখানে।
বাইরে ঘরে দু' সেট সোফা। বাদামী রঙের। সামনে কাঠের সেন্টার টেবিল। ওপরটা কাঁচের। টেবিলের নিচে কিছু ম্যাগাজিন রাখা। একটা সানন্দা চোখে পড়ল অনন্যার। সামনে টি ভি। বন্ধ ছিল। ঘরের একদিকে একটা বড় বইয়ের র্যাক। এটির কথাই বোধহয় সমর বলেছিল। সমর ভীষণ বই পড়তে ভালোবাসে। অনন্যাও। সেভাবেই ওদের আলাপ অবশ্য।
সোফায় অনন্যার পাশে বসলেন সমরের মা। শুরু হল গল্পগুজব। বাড়িতে কে কে আছে, বাবা কোথায় চাকরি করেন, এসব। ভদ্রমহিলাকে ভীষণ ভালো লাগছিল অনন্যার। কথা বলতে বলতে বার বার ওর হাতে, পায়ে হাত রাখছিলেন। যেন আজকের আলাপ না।
এর মধ্যে হঠাত পাঞ্জাবী পাজামা পরা এক ভদ্রলোক ঘরে ঢুকলেন। ভিতরের কোন ঘরে ছিলেন হয়ত। এসেই সবার দিকে একবার ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থেকে
-- খাবার কই, খাবার। বাবু খাবার আনিসনি?
বলে চেঁচালেন। অনন্যা বুঝতে পারল ইনি সমরের বাবা। প্রণাম করবে বলে উঠছিল, কিন্তু সমর তার আগেই ওনাকে ভিতরের ঘরে নিয়ে গেল। ওর মা বলতে লাগলেন
-- কি বলি বলো, আগে তবু বেরোত, আজকাল বাড়িতে বন্ধ থেকে থেকে মাথাটা একেবারে গেছে।
এবার নিজে থেকেই ওনার হাত ধরল অনন্যা।
-- না না কাকিমা, কিচ্ছু ভাববেন না। আমি শিওর কাকু সুস্থ হয়ে উঠবেন শিগগিরি।
-- তোমার মুখে ফুল চন্দন পড়ুক মা। দাঁড়াও আমি চা নিয়ে আসি। সমরের কাছে শুনেছি তুমি বই পড়তে খুব ভালোবাসো। সমরের বই দেখবে? ঐ দেখো র্যাকটা।
-- হ্যাঁ কাকিমা, আমি দেখছি।
এবার আস্তে আস্তে উঠে বইয়ের র্যাকের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো অনন্যা। কত বই। তার পড়া বই যেমন আছে, না পড়াও আছে। ওটা কি, হেনরি ফ্রেড্রিকের সংস অব সলিটিউড। দেখি।
বইটা হাতে নিয়ে দেখছিল অনন্যা যখন ওর মাথায় আঘাত হানা হল। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ল সে। বইটি হাত থেকে ছিটকে পড়ল। আরো বার কয়েক আঘাত করে থেঁতলে দিয়ে থামল সমর। এর বেশী মারলে বোধহয় ঘিলু বেরিয়ে আসবে।
ভিতর থেকে সমরের বাবার গলা শোনা গেল
-- বাবু, খাবার এনেছিস? খাবার কই বাবু?
সমর এবার বিরক্ত গলায় বলল
-- দাঁড়াও মাকে রান্না করতে দাও।
No comments:
Post a Comment